• June 19, 2025

Chalachchitra

Explore the magic of Bengali cinema and culture

‘অপরাহ্ন’ থেকে ‘সার্ভিস হোল্ডার’: পছন্দের ১০ নাটক, পর্ব-এক

কোলাজ: দোকানী বউ, কথা হবে তো ও ফসিল

অপরাহ্ন (২০০৭): হুমায়ূন আহমেদের নাটক। বাবা তার একমাত্র আদুরে কন্যার বিবাহ দিতে কোনো কার্পণ্য করছেন না, বিয়ের আগের রাতে বরপক্ষ এসে চাচাকে জানিয়ে যায় যৌতুক বাড়িয়ে দিতে। এই নিয়ে চাচা বেশ চিন্তিত, বিয়ের দিন দুপুরে বাবাকে সাপে কামড়ায়, শুরু হয় অন্য জটিলতা। হুমায়ূন আহমেদের চিরায়ত চিত্রনাট্য, এজাজুল ইসলাম, মনিরা মিঠু, রহমত আলীদের ভালো অভিনয় ও সুন্দর সমাপ্তির জন্য এই নাটকটা দেখতে ভালো লাগে।

কোলাজ: দোকানী বউ, কথা হবে তো ও ফসিল

মঙ্গলী (২০০৪): পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসে মঙ্গল গ্রহ। সেইজন্য বাংলাদেশে নেমে আসে এক এলিয়েন, নেয় নারী রূপ। জাহিদ হাসান ইন্টারনেটের মাধ্যমে এইসব নিয়ে কাজ করছিল, হঠাৎ-ই তার রুমে আগমন ঘটে সেই এলিয়েনের। মঙ্গল গ্রহ থেকে আসায় নাম হয় মঙ্গলী,এরপর শুরু হয় নানা কান্ড।

কাজী রশিদুল হক পাশার রচনা ও পরিচালনায় ‘মঙ্গলী’ নাটকে নাম ভূমিকায় ছিলেন তারিন। জাহিদ হাসানের প্রেমিকার চরিত্রে ছিলেন তানভীন সুইটি। আরো অভিনয় করেছেন মীর সাব্বির, অরুনা বিশ্বাস,বাবুল আহমেদরা।

ফসিল (১৯৯৫):একটা বদ্ধরুমে নীলাকে চেয়ারে মুখ ও হাত বেঁধে রেখে দুই কিডন্যাপার দবির ও মতিন তাস খেলছে আর সিগারেট ফুঁকছে। নীলা মুখ খুলে দেয়ার জন্য ছটফট করছে,অবশেষে মুখ খুলে দেয়া হয়। নীলার আহ্লাদী ও মায়াভরা কথায় দবির ও মতিনের ধীরে ধীরে মন গলে যায়, তাদের মধ্যে ভালো মানুষের গুণ প্রকাশ পেতে থাকে। রাজীবের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার জন্য নীলাকে দিয়ে চিঠি লেখায় তাঁরা, টাকাও পেয়ে যায়। কিন্তু এই টাকা পেয়ে সবাই অবাক হয়ে যায়, নীলার বিশ্বাসে চিড় ধরে, সেও হতবাক হয়ে পড়ে! কিন্তু কেন!

মুহম্মদ জাফর ইকবালের রচনায় ফাখরুল আবেদীনের প্রযোজনায় দারুণ নাটক ‘ফসিল’। সুবর্ণা মুস্তাফার দারুণ অভিনয় সঙ্গে ছিলেন তৌকীর আহমেদ ও খায়রুল ইসলাম পাখি।

আদিম আগুন জ্বেলেছিল (২০০৯): খুব সকালে বাসার নিচতলায় স্লিপিং ব্যাগে একজন লোককে শুয়ে থাকতে দেখে সবাই অবাক। কে সে? কী চায়? আর এখানেই বা কেন? এই আগন্তুক এক যুবক। সে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারে, তার নাম ও ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশ। তার কাছে একটা জাদুর বাক্স আছে। তাতে রাখা আয়নায় নিজেদের মুখ দেখে বাড়ির সবাই অবাক!

সেলিম আল দীনের রচনায় নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় নাটক ‘আদিম আগুন জ্বেলেছিল’। আগন্তকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অপূর্ব। এছাড়া রিয়া, চিত্রলেখা গুহ, আবুল কাশেম ছিলেন অভিনয়ে। বিটিভিতে দিয়েছিল।

দোকানীর বউ (২০০৫): শ্বশুরবাড়ির যৌতুকের টাকা দিয়ে বাড়ির পাশে ছোট্ট দোকান দিয়েছেন মাহফুজ আহমেদ, তার বউ তানভীন সুইটি সারাক্ষণ নজরদারিতে রাখেন। মাহফুজের পরিবারের লোকেরা সুইটিকে পছন্দ করে না, কারণ সে আলাদা থাকে। এইদিকে সুইটিকে বাদ দিয়ে পরিবারের আর বাকি সবাই গোপনে পরামর্শ করে, কী সেটা!

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প অবলম্বনে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের নাটক ‘দোকানীর বউ’। সুইটির অনবদ্য অভিনয়, সঙ্গে মাহফুজ আহমেদ। আরো আছেন চঞ্চল চৌধুরী, শাহানা সুমি, নরেশ ভূঁইয়া, শামীমা নাজনীন ও মায়া ঘোষ।

কথা হবে তো? (২০১৭): আহসান হাবিবের কবিতার অনুপ্রেরণায় গাউসুল আলম শাওন লেখা নাটক ‘কথা হবে তো?’, অব্যক্ত প্রেমের নাটকটি ছিল অন্যতম দর্শকপ্রিয় নাটক। মনোজ প্রামাণিক ও নাবিলার অভিনয়সমৃদ্ধ ও সুবীর সেনের গাওয়া ‌‘সারাদিন তোমায় ভেবে’ গানটি নাটকটিকে পূর্ণতা দিয়েছিল। নির্মাণ করেছিলেন প্রতিভাবান নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকি। আরো ছিলেন খায়রুল বাসার ও টুনটুনি।

শুরুটাই সুন্দর (২০২২): ‘জীবনে আসা সহজ, থেকে যাওয়া কঠিন’। আজকাল বিয়ের যে চাকচিক্য, সেটাই যে বিয়ের আনন্দে চাপ হয়ে দাঁড়ায়। সেটাই দেখিয়েছে নির্মাতা, বরং সাধারণভাবে সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে একসাথে থাকাটাই বড় কথা।

মিজানুর রহমান আরিয়ানের নাটক। তৌসিফ মাহবুব ও তাসনিয়া ফারিণের সাবলীল অভিনয় শেষে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় ও সংলাপগুলো মনে গেঁথে আছে।

সাদা আলো সাদা কালো (২০০৯): নীরা নামের ডাক্তারি পড়া এক মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপি করিম। যে কন্ঠ নকল করে কথা বলতে পারে, এক মজার ঘটনায় পরিচয়ে প্রেম হয় পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে। এই দুজনের মাঝে আসে নেফারতিতি ওরফে তানিয়া হোসেন। কে এই নেফারতিতি!

মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের পরিচালনায় এই নাটকের নাম ‘সাদা আলো সাদা কালো’। উজ্জ্বল সাহেব অনন্য নির্মাণগুণের কথা সবাই জানে,সঙ্গে মুগ্ধ করা সংলাপ।

করিমন বেওয়া (২০০১): মুক্তিযুদ্ধের অনেক বছর পেরিয়ে গেছে, গ্রামে দুঃখ কষ্টে বেঁচে আছেন বীরাঙ্গনা করিমন বেওয়া, গ্রামের মাতবরের নজর তার ভিটা-জমির দিকে। একদিন ঢাকা থেকে একদল আসে, তাকে বিশেষ সম্মাননা দেবার জন্য। ঢাকায় যায় করিমন,কিন্তু তাদের ধারণা হয় তারা ভুল করিমনকে আনা হয়েছে, ফিরিয়ে দেয়া হয় তাকে। যখন তারা সঠিক জানতে পারে,আবার যান করিমনের কাছে, কিন্তু তিনি আর আসেন না।

আনিসুল হকের লেখা ‘একজন বীরাঙ্গনার খোঁজে’ অবলম্বনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মাণ করেন একুশে টিভির জন্য ‘করিমন বেওয়া’। নাম ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেন প্রয়াত অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার।

সার্ভিস হোল্ডার (২০১০): দুই ভাইয়ের জীবন সংগ্রামের গল্প। বড় ভাই গ্রামের কৃষক, অতি দরিদ্র। কঠিন পরিশ্রমের টাকা উপার্জন করে ছোট ভাইকে শিক্ষিত বানিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সে নিজেও কষ্ট করেছে। তবে ছোট ভাই পেছনের অতীতকে ভুলে যেতে যায়। গ্রামে বেড়াতে এসে প্রতিবেশীরা শুধু অতীতই মনে করিয়ে দেয়, এতে রেগে যায় ছোট ভাই।

বৃন্দাবন দাশের রচনায় জীবনঘনিষ্ট এই নাটকে নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু। চঞ্চল চৌধুরী ছিলেন ছোট ভাইয়ের চরিত্রে। আরো ছিলেন বৃন্দাবন দাশ, শাহনাজ খুশি, প্রভা, আখম হাসান ও শামীম জামান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *