• October 20, 2025

Chalachchitra

Explore the magic of Bengali cinema and culture

রাজনৈতিক পটপরিবর্তন/ আয়নাঘর, হারুনের ভাতের হোটেল ও খালেদা জিয়ার বায়োপিক

ByDidarul Islam Himel

Aug 24, 2024

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের ছোঁয়া লেগেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনেও। গত সরকারের আলোচিত ইস্যু ‘আয়নাঘর’ ও ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা শোনা যাচ্ছে। এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বায়োপিক নিয়েও কথা উঠেছে। এটাও জানা গেল, এক দশকের বেশি সময় আগের নির্মিত বায়োপিকে অভিনয় করেছিলেন নিপুণ আক্তার!

‘আয়নাঘর’ বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে এরই মধ্যে কয়েকটি ছবি নির্মাণের ঘোষণা এসেছে। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির শিডিউল খাতা মোতাবেক, গত ১০ দিনে ৬টির মতো ছবির নাম নিবন্ধিত হয়েছে। ঘুরেফিরে ‘আয়নাঘর’ নামটি প্রাধান্য পেয়েছে। পরিচালক সমিতির শিডিউল খাতার প্রাপ্ত তথ্যমতে, বদিউল আলম খোকন ‘ভয়ংকর আয়নাঘর’, জয় সরকার ‘আয়নাঘর’, বেলাল সানি ‘পরিবর্তন’, জানেসার ওসমান ‘অন্ধকারের আয়নাঘর’ নামে ছবি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে নাম নিবন্ধন করেছেন।

সেই সঙ্গে তালিকায় আছেন পুলিশ বিভাগের আলোচিত-সমালোচিত মুখ হারুন-অর-রশিদও। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে থাকার সময় তিনি বিভিন্নজনকে তার দপ্তরে ডেকে খাবার খাওয়াতেন। খাওয়ানোর সেসব স্থিরচিত্র ও ভিডিও তিনি ফেসবুকে প্রচারও করতেন। অনেকেই তাই গোয়েন্দা কার্যালয়কে হারুনের ভাতের হোটেলও বলতেন। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী জাদু আজাদ ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ নামে একটি ছবি পরিচালক সমিতিতে নিবন্ধন করেছেন।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ নামের সিনেমাটি বানাবেন এম কে জামান। পরিচালক সমিতিতে সিনেমাটির নামও নিবন্ধন করেছেন পরিচালক।

এ বিষয়ে জানতে এম কে জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে আমাদের দেশে। আমি মনে করি, খালেদা জিয়ার মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়েও সিনেমা তৈরি হওয়া দরকার। সেই ইচ্ছা থেকে এ চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়া। তবে তাঁকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নতুন নয়। অনেক আগে থেকেই তাঁর জীবনী নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করছিলাম।’

নির্মাতা জানান, খালেদা জিয়ার পরিবার থেকে অনুমতি নিয়েই পরিচালক সমিতিতে নাম নিবন্ধন করেছেন তিনি। সিনেমার গল্পে খালেদার জিয়ার পুরো জীবনকাহিনি তুলে ধরতে চান এম কে জামান। এতে খালেদা জিয়ার তিনটি বয়সের চরিত্রে অভিনয় করবেন তিন অভিনয়শিল্পী। প্রাপ্তবয়স্ক ও পড়ন্ত বয়সের চরিত্রে নির্মাতার পছন্দ মৌসুমী ও ববিতা। তবে এ বিষয়ে এখনো অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি হয়নি।

এদিকে ২০১৩ সালে ‘আপসহীন’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন কিংবদন্তি গীতিকার-প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। দুইবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক এটি, পারিপার্শ্বিক কারণে তখন এই তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ছবিতে খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার, বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চরিত্রে আছেন হেলাল খান। ১১ বছর পর এবার আলোর মুখ দেখতে চলেছে ছবিটি।

২০১৩ সালের নভেম্বরে শুটিং শুরধ করে ডিসেম্বরেই শেষ হয়। দ্রুত পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ সম্পন্ন করে সেন্সরে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন হেলাল খান। তার আগেই গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এই কর্মী।

তিনি ছিলেন দলের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের নেতা। পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (৫ জানুয়ারি) আগে ছবিটি সারা দেশে মুক্তি দেবেন। হেলাল খান জেলে থাকায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার আপসহীনমুক্তির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এখন গাজী মাজহারুল আনোয়ার বেঁচে নেই।

ছবিটি শিগগির মুক্তি দিতে চান হেলাল খান। তার আগে অবশ্যই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একবার দেখা করতে চান তিনি। হেলাল খান বলেন, ‘ম্যাডাম অসুস্থ। এই মুহূর্তে এটা নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না। তিনি সুস্থ হলেই ছবিটি নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করব। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।’ তবে সাম্প্রতিক বিবেচনায় ছবিটিতে বেশ কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন আনার কথাও জানান হেলাল খান।

‘আপসহীন’ ছবিতে বেগম খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেত্রী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক। ছবিটিতে যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের ঘটনা জানিয়ে তিনি বলেন, “একদিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আমার বাসায় আসেন। ছবিটির কথা জানালেন। তখন শাহ আলম কিরণ ভাইয়ের ‘৭১-এর মা জননী’ ছবির শুটিং চলছে। আমাকে আঙ্কেল বললেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে ‘আপসহীন’। আমাকে তাঁর চরিত্রেই রূপদান করতে হবে। জানতে চাইলেন, আমার আপত্তি আছে কি না। জানালাম, অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডামের চরিত্রে অবশ্যই অভিনয় করা উচিত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে রাজপথে সরব। আমি রাজি হওয়ায় আঙ্কেল খুব খুশি হলেন। জানালেন, আমার আগে জয়া আহসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশার কথা উঠেছিল। তবে গাজী আঙ্কেলই হেলাল ভাইকে বলেছিলেন, নিপুণ হলে ম্যাডামের চেহারার সঙ্গে দারুণ মিলবে।’

‘আপসহীন’ নির্মাণের আগে অনেক দিন ধরে চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। বেশ কয়েকবার বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও ছবিটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। অভিনেতা ও ছবির প্রযোজক হেলাল খানের সঙ্গে দিন-রাত এক করে কাজ করেছিলেন—জানালেন প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সন্তান সরফরাজ আনোয়ার উপল। তিনিও চান দ্রুত ছবিটি মুক্তি পাক। খবর ইত্তেফাকআজকের পত্রিকা ও কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *