• June 29, 2025

Chalachchitra

Explore the magic of Bengali cinema and culture

হীরা’র জন্ম যেভাবে…

ByDidarul Islam Himel

Jan 14, 2024

হীরা ! শব্দটি শোনামাত্রই আমাদের কল্পনায় ভেসে ওঠে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ধবধবে কোন পদার্থের কথা ! সৌখিন মানুষদের মধ্যে যাদের টাকা পয়সার কোন কমতি নেই তাদের শৌখিনতা প্রদর্শনের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো হীরা। যাদের এই ডায়মন্ড কেনা কিংবা দেখারও সৌভাগ্য নেই তাদেরও এটা নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। কিন্তু আমরা সবাই কি জানি এই ডায়মন্ড বা হীরা কি জিনিস? কিভাবে এই হীরার উৎপত্তি? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কিংবা দামি হীরা কোনটি? হীরার ব্যবহারই বা কি গয়না ব্যতীত? তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক হীরা সম্পর্কিত অজানা যত তথ্য….

হীরার উৎপত্তি

অনেকেই ধারণা করেন যে মাটির অভ্যন্তরে থাকা কয়লা থেকে সৃষ্টি হয় হীরা ( Diamond )। তবে এই ধারনাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। হীরা গঠনে খুব সামান্যই অবদান রাখে কয়লা। প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া যেসব ডায়মন্ড পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগের বয়সই ছিল পৃথিবীর স্থলভাগের প্রথমদিকের উদ্ভিদের চেয়েও বেশি। এই উদ্ভিদগুলোই ছিল পৃথিবীর কয়লার প্রধান উৎস, তাই কয়লার উপর নির্ভর করে যে ডায়মন্ড সৃষ্টি হয়নি এটা বোঝা যায়। অনেক অনেক বছর আগে পৃথিবীর বুকে হীরার সৃষ্টি হয়। মাটির গভীরে প্রায় ১৪০-১৯০ কিলোমিটার নিচে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপের মাঝে থাকা হীরার মূল আকরিকগুলো প্রবল অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ছিটকে বেরিয়ে আসে পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে। বাইরে আসার পর এরা শীতল হয়ে জমাট বাধে ও কিম্বারলাইট তৈরি করে। এখান থেকেই রাফ ডায়মন্ড পাওয়া যায়। মাটির নিচে এরা ৪৫-৯০ কিলোবার চাপে এবং ৯০০-১৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় থাকে হীরা।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হীরা

পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হীরার নাম হচ্ছে কুলিনান। ৩১০৬.০০ ক্যারেটের এই হীরাটির ওজন ৬২১ গ্রাম। ১৯০৫ সালে এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া যায়। ট্রান্সভাল সরকার সে সময় ১৫০,০০০ পাউন্ড দিয়ে এটি কিনে নেন এবং রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডকে উপহার দেন। রাজা কুলিনানকে কেটে খণ্ড খণ্ড করেন। এই খণ্ডগুলো কয়েকটি ব্রিটিশ রাজ মুকুটের শোভা বাড়ায়। স্টার অভ সিয়েরা লিওন নামের হীরাটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭২ সালে সিয়েরা লিওনে। ৬৮.৮০ ক্যারেটের হীরাটির ওজন ২২৫ গ্রাম।

১৯৪৫ সালে সিয়েরা লিওনের ওয়ি নদীর তীরে পাওয়া যায় ৭৭০.০০ ক্যারেটের ডায়মন্ড ওয়ি রিভার। হীরাটি কেটে ৩০টি পৃথক পৃথক ডায়মন্ড পিস পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় খণ্ডটির নাম ভিক্টরি। ১৯৩৮ সালে ব্রাজিলের আনটোনিও নদীর তীরে ৭২৬.৬০ ক্যারেটের প্রেসিডেন্ট ভারগাস হীরা পাওয়া যায়।

সবচেয়ে দামি হীরা

‘পিংক স্টার’ নামের হীরাটি এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি হীরা। দাম ৭ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ৫৭২ কোটির বেশি। রত্ন-পাথরের নিলামে এটিই সর্বোচ্চ বা বিশ্ব রেকর্ড। বিরল হীরাটি ৫৯ দশমিক ৬০ ক্যারেটের।

হীরা সম্পর্কে অজানা যতকিছু…

  • ধারণা করা হয় সর্বপ্রথম ডায়মন্ড আবিষ্কার হয় ভারতবর্ষে !
  • শুধুমাত্র হীরা দিয়েই হীরাকে কাটা যায়।
  • পৃথিবীর প্রায় ৫০ ভাগ ডায়মন্ড আফ্রিকাতেই পাওয়া যায়।
  • স্বর্ণের ক্ষেত্রে ক্যারেট বিশুদ্ধতার একক হলেও হীরার ক্ষেত্রে ক্যারেট হচ্ছে ভরের একক।
  • হীরা কিন্তু খনি থেকে এতো সুন্দর অবস্থায় পাওয়া যায় না। একে কেটে পালিশ করে এমন সুন্দর রূপ দেয়া হয়।
  • রঙ্গীন হীরাগুলোর মধ্যে লাল রঙের ডায়মন্ড সবচেয়ে কম পাওয়া যায়। বাংলায় একে রক্ত হীরকও বলে।
  • বাংলাদেশে কোন হীরার খনি না থাকলেও হীরা কাটার কারখানা রয়েছে। বিদেশ থেকে খনিজ ডায়মন্ড আমদানী করে সেগুলোতে হীরা কাটা আর পালিশ করা হয়ে বিভিন্ন জুয়েলারীর দোকানে বিক্রি করা হয়।

হীরা শৌখিনতার প্রতিক হিসাবে প্রধানত গয়নারূপে ব্যবহার হলেও এর নানাবিধ ব্যাবহার রয়েছে। তবে এর আকাশসম দামের পেছনে মূলত মানবসৃষ্ট হাইপ ই দায়ী। তবে দাম, ব্যাবহার যাই হোক হীরা অনন্য সৌন্দর্যের প্রতিক হিসেবে হীরাকে মানা হয়েছে,হচ্ছে, হবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *