সত্যের মৃত্যু নেই; পরিচালক – ছটকু আহমেদ
শ্রেষ্ঠাংশে – সালমান শাহ, শাবানা, আলমগীর, শাহনাজ, শাহরুখ শাহ, তুষার খান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, শারমিন, রাজিব, মিশা সওদাগর, বেলাল আহমেদ, জালাল আহমেদ, ফকিরা প্রমুখ; উল্লেখযোগ্য গান – চিঠি এলো জেলখানাতে, নয়নের কাছে থেকো, সুখের আরেক নাম, এই পথ আমার ঠিকানা; মুক্তি – ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬
১৯৯৬ সালের সালতামামিতে এক্সট্রাঅর্ডিনারি হিট ছবি বলা হয়েছিল ‘সত্যের মৃত্যু নেই।’ কেন এক্সট্রাঅর্ডিনারি হয়েছিল জানেন কি? অমর নায়ক সালমান শাহ-কে ফাঁসির আসামী হয়ে পর্দায় কখনো দেখেনি তার দর্শকেরা। তাই দর্শক ব্যতিক্রমী রোলে থাকা সালমানকে লুফে নিয়েছিল। ১৯৯৬-র সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি হয়ে যায় ‘সত্যের মৃত্যু নেই।’ হয়ে যায় এক্সট্রাঅর্ডিনারি হিট।
ছবির একটা পেপার কাটিং-এ আকুতির বর্ণনা ছিল সেটি আজকের জন্যও শিক্ষণীয় কীভাবে পোস্টার হতে পারে ছবির প্রচারের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। বলা হয়েছে করুণভাবে-‘এক সন্তানের ফরিয়াদ, আমাকে একটু আদর করো মা, আমাকে একটু আদর করো।’
সালমান শাহ ততদিনে আর পৃথিবীতে নেই। দর্শকদের বেদনায় ভাসিয়ে এ ছবি মুক্তির কিছুদিন আগেই সে চলে গিয়েছিল না ফেরার দেশে। দর্শককে তাই বুকে কষ্ট নিয়ে ছবিটি দেখতে হয়েছিল। অবধারিতভাবেই সালমানের ক্যারিয়ারে এটি অন্যতম সেরা বাণিজ্যিক ছবি।
সত্য তার নিজ গুণেই প্রকাশিত হয় যতই মিথ্যা তাকে ঢেকে রাখুক। মিথ্যার শক্তিকে পরাজিত করে সত্যের মু্ক্তি পায়। সত্যকে মেরে ফেলতে চাইলে লাভ জোটে না। এ থিম থেকে ফ্যামিলি ড্রামার ভেতর দিয়ে পরিচালক ছটকু অাহমেদ ছবিতে ‘happiness’ ও ‘sadness’-কে অালাদা করে উপস্থাপন করেছেন।
শাবানা তার বাবা আনোয়ার হোসেনকে মজা করে একটা মিথ্যা বলেছিল। মিথ্যাটিকে সত্যি মনে করে টেনশন নিয়ে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তার। ‘মিথ্যা বলা পাপ কোনোদিন মিথ্যা বলবি না’ এ পরামর্শ দিয়ে যান শাবানাকে। শাবানা শপথ করে কোনোদিন মিথ্যা বলবে না। লোকাল মাস্তান ফকিরার খুনের স্বাক্ষী দেয় শাবানা। এর ফলে আসাদের স্ত্রী খুন হয় ভুল করে। তার ছেলেকে নিজের ছেলের মতো করে মানুষ করে শাবানা কারণ তার জন্য খুন হয়েছে ছেলেটির মা। ছেলেটি হয় শাহরুখ শাহ। আদর বেশি পায় সে বিপরীতে অনাদরে অন্যরকম হয়ে ওঠে শাবানার নিজের ছেলে সে বড় হয়ে হয় সালমান শাহ। মানুষের উপকার করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা তার ধর্ম। এর জন্য নালিশ শুনতে হয় তাকে বাড়ি ফিরে। রাজিব আসাদের বন্ধু। আসাদ আবার বিয়ে করে। রাজিবের ছেলে মিশার সাথে নিজের মেয়ে শাহনাজের বিয়ে ঠিক করে অাসাদ কিন্তু মিশার চরিত্র ভালো না জেনে রাজি হয় না। ঘটনাচক্রে আসাদকে রাজিবকে চড় মারলে খুন করে রাজিব। সে খুনের দায় পড়ে সালমানের ওপর। মা শাবানা সত্যের জয়ের জন্য ছেলের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দেয়। সালমানের ফাঁসির আগ পর্যন্ত ঘটতে থাকে নাটকীয়তা। পুরো ছবিতে ফ্যামিলি ড্রামাই ছিল প্রাণ।