• June 26, 2025

Chalachchitra

Explore the magic of Bengali cinema and culture

মিসেস ভাসিলিয়েভ: ৬৯ জন সন্তানের জন্ম দেয়া মা!

সবচেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দেয়ার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড এ নাম তার। রাশিয়ার মস্কোর সুইয়া নামক গ্রামের এক কৃষক ফেদেরাও ভাসিলিয়েভের স্ত্রী মিসেস ভাসিলিয়েভ ৬৯ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন।

তিনি তার জীবনে সর্বমোট ২৭ বার গর্ভধারণ করেন। ১৭২৫ সাল থেকে ১৭৬৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি গর্ভধারণ করেই কাটিয়েছেন। তিনি একসাথে ৪ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ৪ বার, একসাথে ৩ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ৭ বার, যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ১৬ বার। ৬৯ জন জন্ম দেয়া শিশুর মধ্যে ২ জন শৈশবে মারা যায় বাকি ৬৭ জন সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে ছিলো।

বেঁচে যাওয়া ৬৭ সন্তান Image credit: wonder history

সেন্ট পিটার্সবার্গে বাণিজ্য করতে যাওয়া এক বণিক ১৭৮৩ সালে সেসময়কার ‘জেন্টলম্যানস ম্যাগাজিন’ নামে এক ম্যাগাজিন পত্রিকায় চিঠি পাঠান। এই খবর ম্যাগাজিনের কাছে পৌঁছানোর পর পুরো পশ্চিমা বিশ্বে সারা ফেলে দেয়। যাইহোক, তারো আগে ১৭৮২ সালে মস্কোর নিকোলস্কের একদল সন্ন্যাসী এই সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন। যা একজন মায়ের সর্বোচ্চ সন্তান প্রসবের রেকর্ড।

আমেরিকার ‘ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার’ এর তথ্য অনুসারে, একটি আমেরিকান পরিবারের একজন সন্তানকে লালন-পালন করার জন্য প্রত্যাশিত গড় খরচ হলো প্রায় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৬১০ ডলার। এই গবেষণা সংস্থাটি ১৯৬০ সাল থেকে এই বিষয়ে গবেষণা করে তথ্য প্রদান করে আসছে। সেই হিসেবে বেঁচে থাকা শিশুরা বর্তমানে জন্মালে খরচ লাগতো প্রায় ১.৫ কোটি ডলারের বেশি টাকায় সেই সংখ্যা বিশাল।

নারী হিসেবে মিসেস ভাসিলিয়েভ অত্যন্ত শক্তিশালী একজন নারী ছিলেন। সে সময় নারীর সন্তান জন্মহারের মৃত্যু হার ছিলো খুবই বেশি। আর চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ছিলো যা তা। তারপরেও এতোগুলা সন্তান জন্ম দিয়েও তিনি দীর্ঘকাল বেঁচে ছিলেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ের এক মহিলার কথা বলা যায় তিনি মিসেস ভাসিলিয়েভ এর কাছাকাছি সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। মরিয়ম নাবাতানজি উগান্ডার এক গ্রামাঞ্চলের নারী। তিনি তার জীবনে ৪৪ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই মরিয়ম এর জীবন ছিল খুবই কঠিন মাত্র ২৩ বছর বয়সেই তিনি ২৫ সন্তানের জননী হয়ে গিয়েছিলেন।

মারিয়াম নাবাতানজি ও তার সন্তানেরা Image credit: all that’s interesting

মিসেস ভাসিলিয়েভ ও মরিয়ম নাবাতানজি এর মতো মা দের বিশেষ শ্রেণীর নারী ভাবা হয়। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড তাদেরকে ‘সর্বকালের সর্বকালের সর্বজনীন মা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, এর অর্থ হল তারা তাদের ঘন ঘন গর্ভধারণের পরেও মাতৃমৃত্যু থেকে বেঁচে থাকার ভাগ্যবান বিভাগে রয়েছে৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সিডিসি রেকর্ড করে যে প্রতি ১০০,০০০ জীবিত জন্মের জন্য, মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার ২৩.৮%!
সিডিসি বলছে, শ্বেতাঙ্গ ও হিস্পানিক নারীদের তুলনায় কালো নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর ঝুঁকি ২.৯ গুণ বেশি। যাইহোক, বিশ্বব্যাপী গর্ভাবস্থা-সম্পর্কিত জটিলতায় বছরে মোট ৩ লক্ষ মহিলা মারা যায়।

মিসেস ভাসিলিয়েভ ও মারিয়াম নাবাতানজি বর্তমানের প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর মত মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা পান নি, কিন্তু তারা দিব্যি স্বাভাবিক ভাবেই সন্তান প্রসব করে বেঁচে গিয়েছিলেন।

মিসেস ভাসিলিয়েভ ও মারিয়াম নাবাতানজিরা বেঁচে গেলেও জীবনে কখনো সুখ শান্তি পান নি। এতো বার সন্তান জন্ম দেয়া আর সারাজীবন গর্ভধারণ করে জীবন কাটিয়ে দেয়া কম কষ্টের ব্যপার না।

Reference: Wikipedia, History, All thats interesting

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *